ভারতীয় পানি সন্ত্রাসের আশঙ্কা: বাংলাদেশের মানুষরা কি আর একটি কৃত্রিম বন্যার মুখে






📌 আজ বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৫–১০টি জেলা এবং ৭২ ঘন্টার মধ্যে ১৫–২০টি জেলা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

বাংলাদেশ মানুষরা কি আবারও প্রতিবেশী ভারতের পানি সন্ত্রাসের শিকার হতে যাচ্ছে কি? গত ১১ ই আগস্ট (৩ দিন পূর্বে) যখন আমি প্রথম বাংলাদেশে একটি বড় মানের বন্যার আশংকার পূর্বাভাস দিয়েছিলাম সেই সময় একটি তথ্য ইচ্ছাকৃত ভাবে চেপে গিয়েছিলাম রাজনৈতিক বিতর্কের ভয়ে। তবে আজকে সেই তথ্যটি শেয়ার করতে বাধ্য হচ্ছি রাজনৈতিক বিতর্কের ঝুঁকি নিয়েই। 

প্রতিবেশী দেশ ভারত ভারা বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর উজানে অবস্থিত ফারাক্কা বাধের  গেট বন্ধ রেখে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ও বিহার রাজ্যের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা গঙ্গানদী এবং এই শাখা ও উপশাখা নদীগুলোর মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ পানি আটকিয়ে রেখেছে জুলাই মাসের শুরু থেক আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত (সম্ভবত ১২ তারিখ পর্যন্ত। ফারাক্কা বাধের গেট বন্ধ রেখে পানি জমিয়ে রাখার প্রমাণ আমি বিশ্লেষণ করা শুরু করেছি জুলাই মাসের ১৫ তারিখের পর থেকেই। ১২ ও ১৩ই আগস্ট ভারি থেকে খুবই ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে ইতিমধ্যেই ফুলে-ফেপে থাকা গঙ্গা নদীর পানি ধারণ ক্ষমতার অবস্থা আরও বিপদ সীমার উপরে চেলে গেছে।

যেদিন আমি দেশের একটি বড় মানের বন্যা পূর্বাভাস দিয়েছি সেই দিন আমি নিশ্চিত হয়েছি যে আগস্ট মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভারত ফারাক্কা বাধের সকল গেট-খুলে দিতে বাধ্য হবে কারণ ঐ দিন আমার বিশ্লেষণে ধরা পরেছে যে গঙ্গা নদীর তীরবর্তী কোন-কোন এলাকায় বন্যা শুরু হয়ে গিয়েছে যা পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে চরম আকার ধারণ করবে। ফলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমে খবর চলে আসবে ফারাক্কা বাধের গেট আটকে রাখার কারণে ঐ সকল এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমার অনুমান সত্য হয়েছে। ১৩ ই আগস্ট থেকে ফারাক্কা বাধের সকল গেট খুলে দেওয়ার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে রাজশাহী জেলার মানুষদের কাছ থেকে। 

ফারাক্কা বাঁধের উজানে যে পরিমাণ পানি জমা রয়েছে তা কমানোর জন্য ফারাক্কা বাধের সকল গেট কমপক্ষে ১ থেকে ২ সপ্তাহ খুলে রাখার আশংকা করা যাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদ্মা নদীর, এবং এর শাখা ও উপনদীগুলোর তীরবর্তী জেলাগুলো বন্যা কবলিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। ২০২৫ সালের বর্ষা মৌসুমে পুরো বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর উপরে (ঐতিহাসিক গড় অপেক্ষা)। এই কারণে ইতিমধ্যে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বন্যা বিপদ সীমার কাছা-কাছি উচ্চতায় রয়েছে। ফলে গতকাল বুধবার ফারাক্কা বাধের সকল গেট খুলে দেওয়ার পর থেকে পদ্মানদীর শাখা নদীগুলো দিয়ে যে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে তার কারণে আজ বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অনেক জেলা বন্যা কবলিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে।   

আজ বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৫ থেকে ১০ টি জেলা এবং ৭২ ঘন্টার (আগামী ৩ দিনের মধ্যে) মধ্যে ঘন্টার মধ্যে ১০ থেকে ১৫ টি জেলা বন্যা কবলিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে রাজশাহী, খুলনা ও ঢাকা বিভাগের যে জেলাগুলোর মধ্য দিয়ে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহিত হয়।       

আজ বৃহস্পতিবার ইতিমধ্যেও রংপুর বিভাগের তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বন্যা বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার শুরু করেছে। ফলে আজ থেকে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা জেলার অনেক এলাকা বন্যা কবলিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। 

আশংকা করা যাচ্ছে আগামী রবিবার থেকে রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা, ময়মনিসংহ বিভাগের ১৫ থেকে ২০ টি জেলা বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার। 

========
ছবি বর্ণনা: 
========
নিচের ছবিটি আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নাসা এর কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত। এই ছবিতে গাড় নীল রং নির্দেশ করতেছে পানির পরিমাণ। এই ছবিত স্পষ্টত দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ও বিহার রাজ্যের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা গঙ্গানদী এবং এই শাখা ও উপশাখা নদীগুলোর মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ পানি জমে আছে। এই ছবিটি ১২ ই আগস্টে তোলা হয়েছে। (Heavy monsoon rains starting in July 2025 contributed to rising floodwaters in Ganga River and its tributaries. This false-color corrected reflectance image (Bands 7,2,1) from the MODIS instrument aboard the Terra satellite on 12 August 2025 illustrates the flood waters in dark blue.)

আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নাসা এর কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত অন্য একটি চিত্র বিশ্লেষণ করে আমি প্রমাণ পেয়েছি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্যের অনেক এলাকার বন্যা শুরু হয়েছে।   


ওয়েবসাইটের তথ্য ব্যবহারের শর্তাবলী ১) এই ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কোন তথ্য কোন প্রকাশনায় (যেমন, সংবাদ পত্র, টেলিভিশন চ্যানেল, ফেসবুক, ব্লগ) ব্যবহার করলে আবহাওয়া নিউজ ওয়েবসাইটের নাম কিংবা এস এম শাকিল (দৈনিক সিরাজগঞ্জ বার্তার স্টাফ রিপোর্টার ও ক্ষুদ্র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক নাম তথ্য সূত্র হিসাবে উল্লেখ করা আবশ্যক। সুত্র http://abohawanews.blogspot.com/

Comments

Popular posts from this blog

জরুরী বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস সিরাজগঞ্জ জেলা সহ ৪ টি বিভাগে

সিরাজগঞ্জ জেলার জন্য বৃষ্টি ও তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস

📅 আজ ৩০ মে ও আগামী ৫ জুন পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের বৃষ্টির পূর্বাভাস

আজ রবিবার সিরাজগঞ্জ সহ ৮ বিভাগেই ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা (৬ ই এপ্রিল, ২০২৫)

সিরাজগঞ্জে বজ্রবৃষ্টি নিয়ে সতর্কতা, 'মহা তীব্র বজ্রপাত' নামে হরতাল-অবরোধ ঘোষণা

সিরাজগঞ্জ সহ দেশব্যাপী তাপপ্রবাহ, কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টি,দিন,ঘূর্ণিঝড় এর পূর্বাভাস

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়ার আগেই আমি সিরাজগঞ্জ জেলা সহ দেশব্যাপীর আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছি মে মাসের

আজ থেকে ৪৮ ঘন্টার জন্য সিরাজগঞ্জ জেলাব্যাপীর জন্য সর্তকতা বার্তা আমার

সিরাজগঞ্জ জেলার জন্য আজ রাতের বৃষ্টি পূর্বাভাস আর শুক্রবারের বৃষ্টি ২০২৪ সালের বর্ষা কাল শেষ হবে কবে?

সিরাজগঞ্জ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের বজ্রপাত ও বৃষ্টিপাত পূর্বাভাস ও দিনের